আসন্ন কুরবানীর ঈদে মানুষের চলাচল ও পশুর হাটে বেচাকেনার কথা বিবেচনায় চলমান কঠোর লকডাউন কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই ফাঁকে গেল কদিন থেকে সিলেটের আলোচিত মেলা ব্যবসায়ী এমএ মঈন খান বাবলু সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার তেমুখি পয়েন্টের শরীফ কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন মাঠে কোরবানী পশু বিক্রির জন্য ”অবৈধ হাট” বসানোর পায়তারা করেন।
ঈদ উপলক্ষে সিলেট সদর উপজেলা প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত কোরবানীর পশুর বিক্রির ইজারা দেয়া হয়নি। এরপরও সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার তেমুখি পয়েন্টের শরীফ কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন মাঠে বুধবার অবৈধ হাট বসানোর জন্য প্রায় ২০/৩০ চন শ্রমিক দিয়ে মাঠে বাঁশ লাগানোর কাজ শুরু করেন মেলা ব্যবসায়ী এমএ মঈন খান বাবলু।
বাজার ইজারার ব্যাপারে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মহুয়া মমতাজ সাফ বলেছেন, সিলেট সদর উপজেলা থেকে কোরবানির পশুর হাট এখনো কাউকে ইজারা দেয়া হয়নি। তিনি বিষয়টি দেখছেন।
কথাও রেখেছেন তিনি, বুধবার সকাল থেকেই চলা প্যান্ডেল বসানোর কাজে বিকেলে অভিযান পরিচালনা করে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) জালালাবাদ থানা। অবৈধভাবে গড়ে উঠা এই পশুর হাটের কার্যক্রম বন্ধ এবং উচ্ছেদ করে দেয় পুলিশ সদস্যরা।
পড়ুন : সিলেটে ইজারা হওয়ার আগেই মেলা বাবলু’র অবৈধ হাট!
এদিকে এর আগে, বুধবার সকালে সরেজমিনে সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার তেমুখি পয়েন্টের শরীফ কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পুরো মাঠ জুড়ে কিছু শ্রমিকরা মাঠের মাটিতে বাঁশ পুতছেন এবং সুতলি দিয়ে বাঁশ বাঁধছেন। তৈরী করা হচ্ছে বিশাল গেইট।
বিষয়টি জানতে একজন শ্রমিককে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, এই মাঠ মেলা ব্যবসায়ী এমএ মঈন খান বাবলু ভাই ইজারা এনেছেন। আমরা শ্রমিকরা শুধু মাঠের বাঁশ লাগানোর কাজ পেয়েছি। ইজারার কাগজ দেখানোর জন্য বললে, শ্রমিকরা জানায়, বাবলু সাহেবের কাছে কাগজ আছে। তিনি আমাদের বলেছেন কেই আসলে তার সাথে আলাপ করিয়ে দিতে। তিনি বাজার সম্পর্কে বিশ্লেষন করবেন।
এরআগে সিলেটের আলোচিত মেলা ব্যবসায়ী এমএ মঈন খান বাবলু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার তেমুখি পয়েন্টের শরীফ কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন মাঠ তিনি ইজারা পেয়েছেন দাবি করে লিফলেট ছাপিয়েছেন। সেই লিফলেট পাঠিয়েছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কোরবানীর গরু ব্যবসায়ীদের কাছে। অথচ সিলেট সদর উপজেলা প্রশাসন থেকে এই বাজারটি ইজারা দেয়নি। তাহলে কেনো মেলা বাবলু এই লিফলেট ছাপালেন এবং বিতরণ করলেন! নাকি মেলার মতো কোররানীর পশুর হাট নিয়েও প্রতারণার ‘নতুন ফাঁদ’ পেতেছেন মেলা বাবলু?
পড়ুন : এবার সিলেটে গরুর হাট নিয়ে মেলা বাবলুর প্রতারণার ‘নতুন ফাঁদ’
বিষয়টি নিয়ে সিলেট লাইভ নিউজ পোর্টাল গত বৃহস্পতিবার ”এবার সিলেটে গরুর হাট নিয়ে মেলা বাবলুর প্রতারণার ‘নতুন ফাঁদ’” এবং আজ বুধবার ”সিলেটে ইজারা হওয়ার আগেই মেলা বাবলু’র অবৈধ হাট!” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বিষয়টি দেখে প্রশাসন এবং এই অবৈধ হাটের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়। কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। আলোচিত-সমালোচিত ও বিতর্কিত মেলা ব্যবসায়ী এমএ মঈন খান বাবলু। মেলার মতোও এবার তিনি প্রতারণার ফাঁদ পেতেছেন এই কোরবানির হাট নিয়ে।
ইজারা না পেয়েও সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার তেমুখি পয়েন্টের শরীফ কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন মাঠে কাজ করাচ্ছেন মেলা ব্যবসায়ী এমএ মঈন খান বাবলু। সিলেট লাইভ-এর কাছে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এই মাঠ ইজারা দেয়া হয়নি ঠিক, তবে ইজারা হবে। আমিই পাবো। আমি আগে থেকেই কাজ ধরিয়েছি।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী মহুয়া মমতাজ জানান, সিলেট সদর উপজেলা থেকে কুরবানির পশুর হাট এখনো কাউকে ইজারা দেওয়া তো দূরের কথা, এখনো কোনো স্থানই নির্ধারণ করা হয়নি। কয়েকটি স্থানের তালিকা করে জেলা প্রশাসনে পাঠানো হয়েছে। এখনো এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসন থেকে আসেনি। অবৈধ হাটের খবর পেয়ে ঘটনাস্খলে পুলিশ গিয়ে তা বন্ধ করে দেয়।
© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সর্বস্বত্ব SylhetLive24.Com কর্তৃক সংরক্ষিত ।